সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন উত্তর প্রদান করার কিছু নিয়ম নীতি

সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন উত্তর প্রদান করার কিছু নিয়ম নীতি
শুধু মাত্র মুখস্ত বিদ্যার উপর নির্ভর করে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অধিক নম্বর পাওয়া সম্ভব নয় এর জন্য প্রয়োজন কিছু নিয়ম নীতি  অনুসরণ করে প্রশ্নের উত্তর দেয়া
এখানে ছাত্র ছাত্রীদের সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন উত্তর প্রদান করার জন্য যে সকল নিয়ম অনুসরণ করা প্রয়োজন তা আলোচনা করা হলো

 আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা দরকার, সৃজনশীল প্রশ্নের ‘গ’ ও ‘ঘ’-এর উত্তর দেয়ার সময় অনেক পরীক্ষার্থী উদ্দীপকের কথা উল্লেখই করেনা। এটি একটি মস্ত বড় ভুল। তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই উদ্দীপকের প্রেক্ষাপটে উত্তর দিবে। এই প্রশ্ন দুটির পাশাপাশি সৃজনশীল প্রশ্নের অন্যান্য প্রশ্নগুলো কিভাবে উত্তর করবে তা নিচে আলোচনা করা হলঃ

‘ক’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর করার ক্ষেত্রেঃ
এই প্রশ্নটির নম্বর ১। এর উত্তরটি একটি শব্দে, একাধিক শব্দে বা সর্বোচ্চ একটি বাক্যে দেওয়া যেতে পারে। সব ক্ষেত্রেই তুমি ১ নম্বর পাবে। অযথা উত্তরের আকার বড় করলে তুমি এই ১ নম্বরের বেশি পাবে না। আবার এক শব্দে সঠিক উত্তর লিখলেও স্যার/ম্যাডাম তোমাকে ১ নম্বরের কম দিতে পারবে না। তবে উত্তরটি একটি পূর্ণ বাক্যে হলেই ভালো হয়। এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর তোমাকে স্মৃতি থেকে দিতে হবে। তাই কী, কে, কখন, কোথায়, কাকে বলে এই জাতীয় প্রশ্নের উত্তরগুলো ভালো করে মুখস্থ করে নাও।

‘খ’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর করার ক্ষেত্রেঃ
‘খ’ নম্বর প্রশ্নের মোট নম্বর ২। এই প্রশ্নে সাধারণত কী বোঝায়, ব্যাখ্যা করো, বর্ণনা করো, কেন এ ঘটনা ঘটেছে ইত্যাদি জানতে চাইবে। এই প্রশ্নটির উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে একটু বুঝতে চেষ্টা করবে তুমি কোন প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করতে যাচ্ছ। প্রথমেই প্রসঙ্গটি একটু সঙ্গায়িত করে নেবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ, যার জন্য তুমি পাবে ১ নম্বর। তারপর প্রসঙ্গটি কয়েকটি বাক্যে নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো বা বুঝিয়ে লেখো। উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ, যার জন্য তুমি পাবে আরও ১ নম্বর। তুমি যদি শুধু জ্ঞান অংশটি  লিখ তবে ১ নম্বর পাবে। আর অনুধাবন অংশ সহ পুরো উত্তরটি লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে পুরো ২ নম্বর। এইক্ষেত্রে উত্তরটি দুই প্যারায় দিতে পারলে ভালো।

‘গ’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর করার ক্ষেত্রেঃ
‘গ’ নম্বর প্রশ্নের মোট নম্বর ৩। এই প্রশ্নে উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে কোনো একটি প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে বলে বা বর্ণনা করতে বলে কিংবা কোনো সূত্র, নিয়ম, তত্ত্ব, নীতি, পদ্ধতি ইত্যাদি প্রয়োগ করে কিছু নির্ণয় করতে বলে। এই প্রশ্নটির উত্তর করার আগে ভালো করে উদ্দীপক ও প্রশ্নটি পড়ে কোন প্রসঙ্গটি নিয়ে তোমাকে উত্তর করতে হবে সেটি বুঝার চেষ্টা করতে হবে। এইক্ষেত্রে যে প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করতে বলে বা যে প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করতে বলে বা যেটি নির্ণয় করতে বলে, সেটি প্রথমে সঙ্গায়িত করে নিতে হবে বা আনুষঙ্গিক কোনো সূত্র বা তত্ত্ব থাকলে তা লিখতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ। এর জন্য তুমি পাবে ১ নম্বর। উক্ত প্রসঙ্গটি নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ। আর উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে উক্ত প্রসঙ্গটি বা সূত্রটি প্রয়োগ করতে পারলে অর্থাৎ, উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে উক্ত প্রসঙ্গটি কীরূপ হবে তা লিখতে পারলে বা সূত্র প্রয়োগ করে কিছু নির্ণয় করতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো প্রয়োগ অংশ। তুমি যদি এক্ষেত্রে শুধু জ্ঞান অংশটি লিখতে পারো, তবে পেয়ে যাবে ১ নম্বর। আবার তুমি যদি জ্ঞানের সাথে অনুধাবন অংশটি লিখতে পারো তবে পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। আর যদি তুমি প্রয়োগ অংশ সহ পুরো উত্তরটি সঠিকভাবে লিখতে পারো তবে পেয়ে যাবে পুরো ৩ নম্বর। এইক্ষেত্রে উত্তরটি দুই থেকে তিন প্যারায় লিখতে পারলে ভালো।

‘ঘ’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর করার ক্ষেত্রেঃ
‘ঘ’ নম্বর প্রশ্নের মোট নম্বর ৪ । এইক্ষেত্রে উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে কোনো একটি প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করে এর থেকে সিদ্ধান্ত নিতে বা ধারণা সৃষ্টি করতে বলে, কিংবা উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে কোনো একটি প্রসঙ্গ সম্পর্কে একটি উক্তি বা বিবৃতি মূল্যায়ন করতে বলে  কিংবা কোনো একটি ঘটনা বিশ্লেষণ করতে বলে। ‘গ’ নম্বর প্রশ্নের মতোই এই প্রশ্নটির উত্তর করার আগে ভালো করে উদ্দীপক ও প্রশ্নটি পড়ে কোন প্রসঙ্গটি নিয়ে তোমাকে উত্তর করতে হবে সেটি বুঝার চেষ্টা করতে হবে । উত্তরের শুরুতে উক্ত প্রসঙ্গটি প্রথমে সঙ্গায়িত করে নিতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ। এর জন্য তুমি পাবে ১ নম্বর। প্রসঙ্গটি নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ। আর উদ্দীপকে প্রদত্ত ক্ষেত্রে এই প্রসঙ্গটি প্রয়োগ করতে পারলে অর্থাৎ, উদ্দীপকে প্রদত্ত ক্ষেত্রে উক্ত প্রসঙ্গটি কীরূপ হবে তা লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো প্রয়োগ অংশ। আর তুমি যদি উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে প্রসঙ্গটি প্রয়োগ করার পর এর থেকে নতুন করে কোনো একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারো, কিংবা কোনো একটি উক্তি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পার কিংবা কোনো একটি ঘটনার পিছনের কারণগুলো কী ব্যাখ্যা করতে পারো (প্রশ্নে যেটি চাওয়া হয়েছে সেই অনুসারে), তবে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো উচ্চতর দক্ষতা অংশ। এক্ষেত্রে শুধু জ্ঞান অংশটি লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে ১ নম্বর। জ্ঞানের সাথে অনুধাবন অংশটি লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। আর যদি তুমি প্রয়োগ অংশটিও লিখতে পারো তবে পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। আর উচ্চতর দক্ষতার অংশটি সহ পুরো উত্তরটি সঠিকভাবে লিখতে পারলে তুমি পেয়ে যাবে পুরো ৪ নম্বর। এইক্ষেত্রে উত্তরটি তিন থেকে চার প্যারায় লিখতে পারলে ভালো। তোমার জানা থাকা ভালো, উত্তরের জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতার অংশগুলো অনেক সময়ই আলাদা করে পর পর লেখা সম্ভব হয়না। সেক্ষেত্রে প্রশ্নটির উত্তর সাজিয়ে লেখার প্রয়োজনে এই অংশগুলো আগে পরে কিংবা একসাথে লেখা যেতে পারে।

তাহলে তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছো, ‘গ’ বা ‘ঘ’ প্রশ্নের উত্তরে শুধু জ্ঞান বা অনুধাবন অংশটি লিখেও তোমার ১ বা ২ নম্বর পাওয়ার সুযোগটি থাকছে। (একইভাবে ‘খ’ প্রশ্নের উত্তরে শুধু জ্ঞান অংশটি লিখেও তুমি ১ নম্বর পেতে পারো।) তাই যদি কোনো একটি সৃজনশীল প্রশ্নের ‘গ’ ও ‘ঘ’ নম্বর প্রশ্নের উত্তর কী হবে তা তুমি পুরোপুরি বুঝতে না পারো, সেক্ষেত্রে অন্তত প্রাসঙ্গিক জ্ঞান ও অনুধাবন অংশগুলো  লিখে এসো। উত্তর সঠিক হলে এইক্ষেত্রে তুমি ১ ও ২ নম্বর পেয়ে যাবে। তাই হাতে সময় থাকলে কোনোভাবেই কোনো প্রশ্নের উত্তর না করে এসোনা। সবগুলি প্রশ্নের উত্তরে প্রাসঙ্গিক কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করবে। আরেকটি ব্যাপার, তুমি এই আংশিক নম্বর পাওয়ার প্রচেষ্টা তখনই শুধুমাত্র করবে, যখন তোমার অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর লেখা ও দেখা শেষ কিন্তু হাতে কিছুটা সময় থাকবে। বাক্য উত্তরের ক্ষেত্রে হতে পারে।


কিছু নিয়ম অনুসরণ করে সৃজনশীল মাধ্যমে প্রশ্ন উত্তর লিখার নিয়ম নিচে দেওয়া হলঃ

ক. জ্ঞানমূক অংশ : (প্রদত্ত নাম্বার-১)

# পাঠ্য বই হতে এক কথায় বা এক বাক্যে সঠিক উত্তর দিবে; এখানে কোনো বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণের দরকার নেই

খ. অনুধাবনমূলক : প্রদত্ত নাম্বার-২ (১+১) [অংশ দুটি : জ্ঞানমূলকে-১ চিন্তন বিশ্লেষণে-১।
# প্রশ্নে যা চাইবে এক কথায় উত্তরের আসলবস্তু জ্ঞান আকারে লেখবে আর দ্বিতীয় প্যারাতে বিশ্লেষণ করে সেটা সর্বোচ্চ ৩-৪ লাইন হলে ভালো হয়। মনে রাখা প্রয়োজন অনুধাবনমূলক প্রশ্নে উত্তরের ক্ষেত্রে সব মিলে ৫ বাক্যে শেষ করতে হবে।

গ. প্রয়োগমূলক অংশ প্রদত্ত নাম্বার-৩ (১+১+১)
[এখানে তোমাকে তিনটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। অংশগুলো হলো :
    #উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাত্ জ্ঞানমূলক আকারে ১ বাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে। এরপর প্রশ্নে চাওয়া বিষয়ের সাথে মূল পাঠ্যের সম্পর্ক নিরূপণের প্রয়াস পেতে হবে; যাকে ব্যাখ্যেয় অংশ বলা যেতে পারে। প্রয়োগের তৃতীয় অংশ অবশ্যই সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে হবে। যা উদ্দীপক এবং মূলপাঠ্যকে একটি নিবিড় সম্পর্কের জালে ফেলবে। এটি হলো অর্জিত জ্ঞান এবং অনুধাবন নতুন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার ক্ষমতা। ১ম প্যারা ১বাক্য; ২য় প্যারা-৩/৪বাক্য আর তৃতীয় প্যারা-৭/৮বাক্য হতে পারে। এখানে সর্বোচ্চ ১২ বাক্য লিখতে পারবে।

ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক : প্রদত্ত নাম্বার-৪ (১+১+১+১) [এখানে তোমাকে চারটি অংশ বা প্যারা করে লিখতে হবে। অংশগুলো হলো :
    #উত্তরের শুরুতেই মূল উত্তরটুকু অর্থাত্ জ্ঞানমূলক আকারে ১বাক্যে উত্তর লেখার চেষ্টা করবে।
    #দ্বিতীয় প্যারাতে প্রশ্নমোতাবেক উদ্দীপক ধরে চিন্তন শক্তি ব্যাখ্যা করবে
    #তৃতীয় প্যারাতে উদ্দীপক ও মূল পাঠ্যের সম্পর্কগত আলোচনা করবে
    #চতুর্থ প্যারাতে সার্বিক বিশ্লেষণ করবে সেক্ষেত্রে উদ্দীপক, মূলপাঠ্য বিষয় ও পারিপার্শ্বিক জীবন ব্যবস্থার সাথে মিল রেখে তোমার অনুভূতি প্রকাশ করতে পারো। ১ম প্যারা ১বাক্য; ২য় প্যারা-২/৩বাক্য আর তৃতীয় প্যারা-৪/৫বাক্য ৬ষ্ঠ প্যারা-৭/৮বাক্য। হতে পারে। এখানে সর্বোচ্চ ১৫ বাক্য লিখতে পারবে।


পরিপূর্ণ  নম্বর পেতে হলে সৃজনশীল মাধ্যমে যে সকল বিষয়ের উপর গুরুত্ত দিতে হবে তা নিম্নে আলোচনা করা হলঃ

    ১. সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য পাঠ্য বিষয়ের ওপর স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। একটি গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার শিক্ষণীয় বিষয়টি কী তা জানতে হবে।

    ২. প্রশ্নে প্রদত্ত উদ্দীপকটি পড়ে মূল কথাটি ভালোভাবে বুঝতে হবে।

    ৩. উদ্দীপকের সঙ্গে গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার কী সাদৃশ্য/মিল বা গরমিল/বৈসাদৃশ্য আছে তা বুঝতে হবে।

    ৪. উদ্দীপকটি একটি গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করে, নাকি আংশিক ভাব ধারণা করে, সে কথা বুঝতে হবে।

    ৫. জ্ঞানমূলক (ক-নং প্রশ্ন) প্রশ্নের উত্তর একটি পূর্ণ বাক্যে লিখতে হবে।

    ৬. অনুধাবনমূলক (খ-নং প্রশ্ন) প্রশ্নের উত্তর দুই প্যারায় লিখতে হবে।

    # প্রথম প্যারায় প্রশ্ন বা প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যের মূল ভাবটি একটি বা দুটি বাক্যে লিখবে।

    # দ্বিতীয় প্যারায় প্রশ্নের বা উদ্ধৃত বাক্যের ব্যাখ্যা করতে হবে। এখানে কেবল কাহিনী বর্ণনা করলে হবে না।

    ৭. প্রয়োগ মূলক (গ-নং প্রশ্ন) প্রশ্নের উত্তর অন্তত তিনটি প্যারায় লিখতে হবে।

    # প্রথম প্যারায় উত্তরের ভূমিকা করতে হবে। গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার মূলভাবের আলোকে ভূমিকা লিখতে হবে। এই ভূমিকা অংশেই জ্ঞান এবং অনুধাবনমূলক বিষয়ক বলা হয়ে যাবে।

    # দ্বিতীয় প্যারা হবে উদ্দীপককে কেন্দ্র করে। প্রশ্নের সঙ্গে মিল রেখে উদ্দীপক থেকে নিজের ভাষায় লিখতে হবে। হুবহু উদ্দীপক লেখা যাবে না।

    # তৃতীয় প্যারা হবে মূল গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতাকেন্দ্রিক। এ প্যারাটিতে উদ্দীপকের কোন চরিত্র বা ঘটনার সঙ্গে গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার কী সাদৃশ্য/মিল বা বৈসাদৃশ্য/গরমিল আছে তা আলোচনা করে প্রমাণ করতে হবে। এই প্যারাটি গ-নং প্রশ্নের উত্তরের প্রধান প্যারা। গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার বিষয় বা কোনো চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ভালোভাবে জানা না থাকলে যথাযথ উত্তর লেখা সম্ভব হবে না।

    ৮. উচ্চতর দক্ষতামূলক (ঘ-নং প্রশ্ন) প্রশ্নের উত্তর চারটি প্যারায় লিখতে হবে।

    # প্রথম প্যারায় গল্প/প্রবন্ধ বা কবিতার মূল ধারণাকে কেন্দ্র করে আদর্শ বা নীতিকথামূলক ভূমিকা লিখবে। এ অংশে জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক কথা লেখা হবে।

    # দ্বিতীয় প্যারায় উদ্দীপক ও প্রশ্নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উদ্দীপকের ধারণা ব্যবহার করে লিখতে হবে। সরাসরি উদ্দীপক লেখা যাবে না।

    # তৃতীয় প্যারায় মূল গল্প/প্রবন্ধ কবিতার বিষয়বস্তু প্রশ্নের আলোকে বিশ্লেষণ করতে হবে। কোনো মন্তব্য থাকলে তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে হবে। বিষয়বস্তু আলোচনা করে নিজস্ব মতামত নিতে হবে। নিজের মতামতের পক্ষে যুক্তি দেখাতে হবে।

    # চতুর্থ প্যারায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্যারায় বক্তব্যের সমন্বয় করে উপসংহার টানতে হবে। এ ছাড়া গ ও ঘ নম্বর প্রশ্নের পার্থক্য বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যেন একই কথায় পুনরাবৃত্তি না হয়।

   
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন: মোট প্রশ্ন ৩০ মোট নাম্বার ৩০ সময় ৩০মিনিট। তোমাদের তিনটি স্তর পার করে তবেই মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। মূল বই বারবার পড়ে গুরুত্বপূর্ণ লাইনের নিচে দাগ দিয়ে রাখবে। শব্দার্থ ও টীকা বার বার পড়বে। কবিতা, প্রবন্ধ বা গল্পের মূল বিষয়বস্তু অবশ্যই তোমাকে বের করতে হবে। কবি বা লেখকের জন্মস্থান, জন্ম মৃত্যু সাল, তাঁর রচিত গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনার বা গ্রন্থের নাম মনে রাখবে।

বর্তমান ক্যাটাগরিতে যে তিনটি স্তর তোমাদের পার করতে হবে তাহলো :

    (ক) সাধারণ বহুনির্বাচনি অংশ : এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতি নির্ভর। এক্ষেত্রে প্রশ্নগুলো কখনো প্রশ্ন আকারে আবার কখনো অসম্পূর্ণ বাক্য হিসেবে দেওয়া থাকে যা উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। বিকল্প উত্তর ৪টি, যার মাত্র একটি সঠিক। এ বিভাগে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা এ ৪টি উপবিভাগ বিদ্যমান থাকে।

    (খ) বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন : এ অংশ জ্ঞানভিত্তিক স্মৃতি নির্ভর নয়। পরীক্ষা ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি আমাদের দেশে নতুন। এ ধরনের প্রশ্নে শুরুতে ৩টি তথ্য ভিত্তিক উপাস্থাপন থাকে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরে ৪টি প্রশ্ন তৈরি করা হয়, রোমান বর্ণে বরাদ্ধ এ প্রশ্নে অনেক সময় একাধিক উত্তর থাকে যার উত্তর প্রদত্ত চারটি প্রশ্নে বিদ্যমান। অতি নিখুঁতভাবে ভেবে এখানে উত্তর করতে হবে তোমাদের। এ স্তরে অনুধাবন, প্রয়োগ, উচ্চতর দক্ষতা যাচাই করতে হয়।

    (গ) অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন : এখানে একটি উদ্দীপক পাবে, যার মাধ্যমে তোমাকে তথ্য সরবারহ করা হবে। প্রশ্নগলোর সাথে একে অপরের মিল দেখতে পাওয়া যাবে।

পরীক্ষায় খাতায় লেখার তিনটি নিয়ম অনুসরণ করা দরকার:
Gonit Sutro PDF Download
    ১। খাতা পাওয়ার পর করণীয় –
        ক – পরিক্ষার হলে খাতা পাওয়ার পর নাম , রোল , শ্রেণী ইত্যাদি নির্ভূল ভাবে লিখতে হবে।
        খ – খাতার প্রতি প্রিষ্ঠায় বাম পাশে ও উপরে এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা ফাকা রেখে মার্জিন টানতে হবে।
        গ – প্রতি পৃষ্ঠার উপরে বা নিচে ক্রমিক নম্বর ও ধারাবাহিক ভাবে বসানো যেতে পারে। এতে খাতার সৌন্দর্য বাড়ে।
   
    ২।  উত্তর লেখার নিয়ম –
        ক – ধারাবাহিক ভাবে সকল প্রশ্নের উত্তর লেখা উত্তম। তবে যদি সকল প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকে, যেটা ভালো জানা থাকবে তার উত্তর আগে লিখবে। যে প্রশ্নের উত্তর ভাল ভাবে জানা নেই, সেটা সব শেষে লিখতে হবে।
        খ – বড় প্রশ্নের উত্তর যেখানে শেষ হবে, ঐ পাতায় অন্য প্রশ্নের উত্তর না লেখা উত্তম। তবে, ছোট প্রশ্নের ক্ষেত্রে যদি জায়গা থাকে, আর উত্তর লিখলে যদি পৃষ্ঠার সৌন্দর্য নষ্ট না হয়, তবে আরেকটি প্রশ্নের উত্তর লেখা যেতে পারে।
        গ – একটা প্রশ্নের উত্তর লেখা সম্পূর্ণ শেষ করে নিচে একটি সরল দাগ দিয়ে প্রশ্নের উত্তর সমাপ্ত বোঝানো উচিত।
        ঘ – যদি একই পৃষ্ঠায় একাধিক প্রশ্নের উত্তর লেখতে হয়, তবে দু’আঙ্গুল ফাঁকা রেখে অন্য প্রশ্নের উত্তর লেখা শুরু করতে হবে।
        ঙ – সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সময় অবশ্যই সাব নাম্বার গুলোর উত্তর ধারাবাহিক ভাবে লিখতে হবে । যেমন , ক এর উত্তর এর পর খ এর উত্তর। বাকি প্রশ্ন গুলো ও এভাবে ধারাবাহিক ভাবে লিখতে হবে।
        চ – প্রশ্নের নম্বর পৃষ্ঠার মাঝামাঝি তে লেখা উচিত। মার্জিন এর বাহিরে লেখা ঠিক নয়।
        ছ – প্রশ্নের উত্তর শুদ্ধ ও সহজ ভাষায় লিখতে হবে।
        জ – একই রীতিতে লিখতে হবে। অর্থাৎ , সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ করা যাবেনা।
        ঝ – সময় ভাগ ভাগ করে লিখতে হবে।
   
    ৩। খাতা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা –
        ক – পরিক্ষার খাতাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত।
        খ – খাতা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হলে, পরিক্ষকের মন জয় করা সহজ হয়, যা অধিক নম্বর প্রাপ্তিতে সহায়তা করে।
        গ – খাতা পরিষ্কার রাখতে হলে, কাটাকাটি করা যাবেনা।
        ঘ – ওভার-রাইটিং করা যাবেনা।
        ঙ – কোনো শব্দের বানান ভুল হলে, শুধুমাত্র একটি টান দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।
অষ্টম শ্রেণীর গণিত সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি ও মান বন্টন সহ গণিত সম্পূর্ণ সমাধান পিডিএফ বই
সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন উত্তর প্রদান করার কিছু নিয়ম নীতি সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্ন উত্তর প্রদান করার কিছু নিয়ম নীতি Reviewed by Math Formula on November 06, 2017 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.